ধবল শোক কিংবা মুক্তির গান - পারভীন সুলতানা
Boierhut Publications
Description
কাহিনি সংক্ষেপ
মণীষা ঘটক, এক ভাঙ্গন ধরা সংসারের শেষ পাটাতন আঁকড়ে থাকা প্রচণ্ড জীবনবাদী তরুণী। ওর পরিবারে র্ধম পাল্টানো জামা কাপড় বদলে ফেলার মতো বিষয় যেন! এক এক করে পরিবারের সবাই চলে যেতে থাকে। কঠিন জীবনের মুখোমুাখ হয় মণীষা। তবু জীবনের র্দুগম পথে সরব পদচারণা থামে না ওর। চাকরি সূত্রে পরিচয় হয় ব্রিটিশ রমণী অরলার সঙ্গে, যে র্আকটিকর্টান পাখির মতো পৃথিবীর এক মেরু থেকে অন্য মেরু ঘুরে বেড়ায়। মণীষার দৃঢ় মনেবলে মুগ্ধ অন্যদিকে মণীষার বাবার দয়া-দাক্ষিণ্যে তৃণমূল থেকে উঠে আসা তোরাব আলী এখন স্বীকৃত জমিনদার। মাটির প্রতি র্দুমর মোহ তোরাবের। তার স্মৃতির জমিনে আছে তিন ভাইবোনের করুণ মৃত্যু। কবরের মাটির জন্য মায়ের আহাজারি দগদগে ঘায়ের মতো কাঁচা এখনও। আগে থেকেই সে জন্য নিজের কবর নিশ্চিত করে রেখেছে তোরাব। সিমেন্ট বাঁধাই কবরের সিথানে খোঁদাই করা নাম লেখা “মোঃ তোরাব আলী”।
লেখক পরিচিতি
আমাদের পরিবার-পরিজনের চেনা আঙিনায় আদর আর ভালোবাসায় ও তখন স্রেফ রুবী। আমি আর রুবী জন্মেছি একই বাড়ির আঁতুড়ঘরে। কিশোরগঞ্জ জেলায়। তাড়াইল থানার জাওয়ার গ্রামের সাড়ে চার শ' বছর পুরোনো খাঁ-সাব বাড়ির জল-হাওয়া আর বৃক্ষরা প্রথম শোনে আমাদের শিশু কান্না । রুবীর জন্ম ১৯৬৩ সালের ১৬ অক্টোবর আর আমি জন্মেছি ১৯৪০ সালে ।
ওর প্রথম ছড়া ছাপে ললনায়। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। আমার বাসা তখন সেগুন বাগিচায়। কাছেই ললনা অফিস। ও নিজে গিয়ে ছড়া দিয়ে আসত। তারপর দ্রুত ওর ছড়াকার পারভীন সুলতানা রুবী হয়ে ওঠা। পাশাপাশি শুরু করে গল্প লেখা । আমাকে কখনো মুখ ফুটে জানায় নি; চায় নি লেখা ছাপার বিষয়ে কোনো সাহায্য। ওর গল্প ইত্তেফাক, সংবাদ, জনকণ্ঠ, অন্যদিন, প্রথম আলো, যুগান্তর, সমকাল, কালের কণ্ঠে নিয়মিত প্রকাশ হতে থাকলে আবিষ্কার করি একজন শক্তিমান গল্পকার পারভীন সুলতানাকে।
আমার যাপিত জীবনের সঙ্গে রুবীর রয়েছে বেশ মিল । ময়মনসিংহ শহরে স্কুল, কলেজজীবন কেটেছে আমার । রেললাইনের ধারে যে বাসায় ছিলাম সে বাসাটা পরে কিনে নেন রুবীর আব্বা আমার প্রিয় দুলাভাই ফজর আলী সাহেব। রুবীর আম্মা রােকেয়া খানম আমার বড় বোন।
জল হাওরের গ্রাম জাওয়ার আর ব্রিটিশদের ফেলে যাওয়া শহর ময়মনসিংহের পাশে বয়ে যাওয়া নদ ব্রহ্মপুত্রের জলতরঙ্গ হয়তো আমাদের মামা-ভাগ্নির মননে গভীর ছায়া ফেলেছিল।
পেশাগতভাবে পারভীন সুলতানা বাংলাদেশের খ্যাতিমান শিক্ষা। প্রতিষ্ঠান ঢাকা সিটি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক। বর্তমানে পালন করছে কলেজের বাংলা বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব। ওর আছে। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থায় কাজ করার দুর্লভ অভিজ্ঞতা। সুবিধা বঞ্চিত প্রান্তিক জনের সঙ্গে কাজ করার জন্য গিয়েছে প্রত্যন্ত গ্রাম- গঞ্জে। মাইল মাইল পথ মোটর সাইকেল চালিয়েছে। সে সব অভিজ্ঞতা এসেছে তার গল্প, উপন্যাসে। খেটে খাওয়া মানুষের জন্য তাই ওর দরদি কলম কথা বলে। আমার প্রত্যাশা বাংলা। কথাসাহিত্যকে পারভীন সুলতানা সমৃদ্ধ করবে।
রাহাত খান
কথাশিল্পী ও সাংবাদিক